ইসলাম সম্পর্কে আমার সংশয়

হাদীস বিষয়ক
সংশয় ১। "‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রওনা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সফিয়্যাকে তাঁর তাঁবুর দরজায় চিন্তিতা ও অবসাদগ্রস্তা দেখতে পেলেন। তিনি বললেনঃ বন্ধ্যা নারী! তুমি আমাদের (এখানে) আটকে রাখবে?" প্রশ্ন: এখানে কি রাসুলুল্লাহ সাঃ সাফিয়া রাঃ কে বন্ধ্যা বলে গালি দিয়েছেন?

সংশয় ২। "নবী (সাঃ) - এর মদীনার দিকে বের হওয়ার তিন বছর আগে খাদীজাহ (রাঃ) - এর মৃত্যু হয়। তারপর দু’বছর অথবা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করে তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - কে বিবাহ করেন। যখন তিনি ছিলেন ৬ বছরের বালিকা। তারপর ৯ বছর বয়সে বাসর উদ্‌যাপন করেন।" 
প্রশ্ন: এখানে একটা ৯ বছরের মেয়ের সাথে বাসর করার কথা বলা হয়েছে। ৫৩ বছর বয়সে ৯ বছরের মেয়ের সাথে সহবাস কিভাবে ঠিক হতে পারে? সম্ভাব্য উত্তর: ব্রাদার রাহুল ও আসাদ নুরের বিতর্কে ব্রাদার রাহুল অনেক বড় বড় মনীষীর নাম উপস্থাপন করেছেন যারা ছোটবেলায় বিয়ে করেছেন। যেমনঃ শেখ মুজিবুর রহমান, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আরও অনেকে। কিন্তু তারা তাদের স্ত্রীর চেয়ে ৫ থেকে ১০ বছরের বড় ছিল। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাঃ আয়েশা রাঃ এর চেয়ে ৪১ বছরের বড় ছিলেন।

সংশয় ৩। "ইবনে ‘আওন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি নাফি’ (রহঃ) -কে এ কথা জানতে চেয়ে পত্র লিখলাম যে, যুদ্ধের পূর্বে বিধর্মীদের প্রতি দ্বীনের দা‘ওয়াত দেয়া প্রয়োজন কি-না? ইবনু ‘আওন বলেন, তখন তিনি আমাকে লিখলেন যে, এ (প্রথা) ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বানূ মুসতালিকের উপর অতর্কিত আক্রমণ করলেন এমন অবস্থায় যে, তাদের পশুদের পানি পান করানো হচ্ছিল। তিনি তাদের যোদ্ধাদের হত্যা করলেন এবং বাকীদের (কাফেরদের মা-বোন ও শিশুদের) বন্দী করলেন। আর সেদিনেই তাঁর হস্তগত হয়েছিল। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৪১১" 
প্রশ্ন: এই যে তিনি তাদেরকে হত্যা ও (নারী ও শিশুদের) বন্দি করলেন। এটা কি মানবতা বিরোধী নয়? সংশয় ৪। ‎"আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর সাওদাহ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে (মলমূত্র ত্যাগ করতে) গেলেন। সাওদাহ এমন স্থূল (মোটা) শরীরের অধিকারিণী ছিলেন যে, পরিচিত লোকদের থেকে তিনি নিজেকে গোপন রাখতে পারতেন না। ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) তাঁকে দেখে বললেন, "হে সাওদাহ! জেনে রাখ, আল্লাহ্‌র কসম! আমাদের নজর থেকে গোপন থাকতে পারবে না। এখন দেখ তো, কীভাবে বাইরে যাবে?" সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৭৯৫" 

প্রশ্ন: এখানে একজন মহিলা মানে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর একজন স্ত্রী টয়লেটে গেছেন। আর ওমর রাঃ শুধু সেদিকে তাকিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি বরং বিরুপ মন্তব্য পর্যন্ত করেছেন। এটা কি ঠিক? 
 
সংশয় ৫। "আবূ উসায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছালাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি (ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্‌ন শারাহীলের কন্যা উমাইয়ার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৫৫" প্রশ্ন: এখানে রাসুলুল্লাহ সাঃ জাওনিয়াকে কেন তার কাছে সমর্পণ করতে বলেছেন? সহবাস করার জন্য না কিসের জন্য? 

সংশয় ৬। ‎ইকরিমাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ)-এর কাছে একদল যিন্দীককে (নাস্তিক ও ধর্মত্যাগীকে) আনা হল। তিনি তাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেন, আমি কিন্তু তাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিষেধাজ্ঞা আছে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। কারণ, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ আছে, যে কেউ তার দ্বীন বদলে ফেলে তাকে তোমরা হত্যা কর। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৯২২" 
প্রশ্ন: এই বর্বরতা কেন? ইসলামী খিলাফতে কি একজন মানুষের ধর্মের স্বাধীনতাটুকুও নেই? আবার সুরা বাকারার ২৫৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, "ধর্ম বা দ্বীন গ্রহণে কোন জোরজবরদস্তি নেই"। তাহলে সাহাবীরা কি কুরআন অমান্য করল না? এমনকি রাসুল সাঃ ও। 
 সংশয় ৭। "‎আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীগণ রাতের বেলায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে খোলা ময়দানে যেতেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৪৬) 
প্রশ্ন: রাসুলুল্লাহ সাঃ কি তার স্ত্রীদের জন্য একটা টয়লেট ও তৈরি করতে পারলেন না? 

সংশয় ৮: ‎আনাস (ইব্‌ন মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ মক্কাবাসী কাফিররা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নির্দশন দেখানোর জন্য বললে তিনি তাদেরকে চাঁদ দু’ভাগ করে দেখালেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৬৩৭)
প্রশ্ন: চাঁদ যদি দ্বিখণ্ডিত হয়ে থাকতো তাহলে, হয় চীন, ভারত, রোমান সাম্রাজ্য, পারস্য সাম্রাজ্য এগুলোর কোন না কোন লোক তো দেখে থাকবে তাইনা। কিন্তু এগুলোর কোন লিখিত ইতিহাস নেই। তাহলে কিভাবে বিশ্বাস করি? নবীজী তায়েফে তার দাঁত হারিয়েছেন। যে লোক চাঁদ দুভাগে ভাগ করতে পারে সে পাথর কেন আটকাতে পারল না? আবার আরবের মাটির নিচে যে এতো তেল ছিল, সেটা আল্লাহ কেন তার রাসূলকে বললেন না?
কুরআনেও অনেক আয়াত আছে যেগুলো একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক।
যেমন:
বিষয়: প্রথম মুসলিম কে? আমরা জানি যে প্রথম মুসলিম হলেন মা খাদিজা রাযিয়াল্লাহু। কিন্তু কুরআনে কি আছে একটু দেখে আসি।

 বায়ান ফাউন্ডেশন: আর যখন আমার নির্ধারিত সময়ে মূসা এসে গেল এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন। সে বলল, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে দেখা দিন, আমি আপনাকে দেখব।’ তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনো দেখবে না। বরং তুমি পাহাড়ের দিকে তাকাও, অতঃপর তা যদি নিজ স্থানে স্থির থাকে তবে তুমি অচিরেই আমাকে দেখবে। অতঃপর যখন তার রব পাহাড়ের উপর নূর প্রকাশ করলেন তখন তা তাকে চূর্ণ করে দিল এবং মূসা বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেল। অতঃপর যখন তার হুঁশ আসল তখন সে বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার নিকট তাওবা করলাম এবং আমি মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’ 
তথ্য: এএখানে বলা হচ্ছে মুসা আঃ মুমিন বা মুসলিমদের প্রথম। [২:১৩১] আল বাকারা إِذ قالَ لَهُ رَبُّهُ أَسلِم قالَ أَسلَمتُ لِرَبِّ العالَمينَ বায়ান ফাউন্ডেশন: যখন তার রব তাকে বললেন, ‘তুমি আত্মসমর্পণ কর’। সে বলল, ‘আমি সকল সৃষ্টির রবের কাছে নিজকে সমর্পণ করলাম’। 
 তথ্য: এখানে ইব্রাহিম আঃ এর কথা বলা হয়েছে যে তিনি প্রথম মুসলিম। ইসলামের অর্থ আত্মসমর্পণ।
 [২৬:৫১] আশ শুআরা:
 বায়ান ফাউন্ডেশন: ‘আমরা আশা করি যে, আমাদের রব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেবেন, কারণ আমরা মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’
তথ্য: এখানে ফেরাউনের জাদুকদের কথা বলা হয়েছে যে, তারা প্রথম মুমিন। 
প্রশ্ন: এখানে যেহেতু এতগুলো আয়াতে আল্লাহ অনেককেই প্রথম মুসলিম বলেছেন। এখানে আল্লাহ নিজেই জানে না যে, কে আসল মুসলিম? 
বিষয়: আল্লাহর বাণী কি পরিবর্তন হয়? [১০:৬৪] ইউনুস لَهُمُ البُشرى فِي الحَياةِ الدُّنيا وَفِي الآخِرَةِ لا تَبديلَ لِكَلِماتِ اللَّهِ ذلِكَ هُوَ الفَوزُ العَظيمُ বায়ান ফাউন্ডেশন: তাদের জন্যই সুসংবাদ দুনিয়াবী জীবনে এবং আখিরাতে। আল্লাহর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তন নেই। এটিই মহাসফলতা। 
তথ্য: এখানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর বাণীসমুহের কোন পরিবর্তন হয়না। [২:১০৬] আল বাকারা ما نَنسَخ مِن آيَةٍ أَو نُنسِها نَأتِ بِخَيرٍ مِنها أَو مِثلِها أَلَم تَعلَم أَنَّ اللَّهَ عَلى كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ বায়ান ফাউন্ডেশন: আমি যে আয়াত রহিত করি কিংবা ভুলিয়ে দেই, তার চেয়ে উত্তম কিংবা তার মত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। তথ্য: এখানে বলা হচ্ছে যে, তিনি আয়াত বাতিল করেন আবার নতুন আয়াত দেন। [১৬:১০১] আন নাহল وَإِذا بَدَّلنا آيَةً مَكانَ آيَةٍ وَاللَّهُ أَعلَمُ بِما يُنَزِّلُ قالوا إِنَّما أَنتَ مُفتَرٍ بَل أَكثَرُهُم لا يَعلَمونَ বায়ান ফাউন্ডেশন: আর যখন আমি একটি আয়াতের স্থানে পরিবর্তন করে আরেকটি আয়াত দেই- আল্লাহ ভাল জানেন সে সম্পর্কে, যা তিনি নাযিল করেন- তখন তারা বলে, তুমি তো কেবল মিথ্যা রটনাকারী; রবং তাদের অধিকাংশই জানে না। 
এখানে যা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট। তাই ব্যাখ্যা করলাম না। প্রশ্ন: আল্লাহ যদি কোন আয়াত নাজিল করেন। এবং পরে সেটা চেঞ্জ করেন এটা বলে যে, এটা আগেরটার চেয়ে সেরা। তাহলে সে কেমন আল্লাহ? যে মানুষের মনের কথা বুঝতে পারে না? নাকি আল্লাহ একটা ভুলভাল আয়াত নাজিল করে বান্দাদের সাথে মজা করেন। এবং পরে বান্দারা বললে ভালোটা দেন?
বিষয়: মানুষকে আল্লাহ কি রুপে সৃষ্টি করেছেন?
[৯৫:৪] আত ত্বীন
 বায়ান ফাউন্ডেশন: অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে।
তথ্য: এখানে বলা হচ্ছে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সর্বোত্তম গঠনে। [৪:২৮] আন নিসা يُريدُ اللَّهُ أَن يُخَفِّفَ عَنكُم وَخُلِقَ الإِنسانُ ضَعيفًا বায়ান ফাউন্ডেশন: আল্লাহ তোমাদের থেকে (বিধান) সহজ করতে চান, আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বল করে। তথ্য: এখানে বলা হয়েছে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বল রুপে। প্রশ্ন: তাহলে আমরা কোনটা মানবো? একবার বলছেন দুর্বল আরেকবার বলছেন শক্তিশালী। এখন আপনি বলতে পারেন যেন, আমি কোন আলেমের কাছে যাই। কিন্তু ভাই আপনি একটু চিন্তা করে দেখুন তো! যে, এগুলোর উত্তর কি কেউ দিতে পারবে? উত্তর তো পারবেই না বরং অন্য পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেবে‌। যদি অন্যদের কথা চিন্তা করি তাহলে কি মনে হয় যে তাদের মাথায় এসব প্রশ্ন আসে না। আসে ভাই আসে। কিন্তু ঐযে ছোটবেলা থেকেই আমাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে, জান্নাত, জাহান্নাম ও ৭২ হুরের কাহিনী দিয়ে। ইসলামে যুক্তিবাদ, দর্শন, মুক্তচিন্তা হারাম। সুরা আহজাবের ৫২ নং আয়াতে রাসুল সাঃকে আর বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। [৩৩:৫২] আল আহ্‌যাব لا يَحِلُّ لَكَ النِّساءُ مِن بَعدُ وَلا أَن تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِن أَزواجٍ وَلَو أَعجَبَكَ حُسنُهُنَّ إِلّا ما مَلَكَت يَمينُكَ وَكانَ اللَّهُ عَلى كُلِّ شَيءٍ رَقيبًا বায়ান ফাউন্ডেশন: এরপর তোমার জন্য (এদের অতিরিক্ত) অন্য স্ত্রী গ্রহণ হালাল নয় এবং তোমার স্ত্রীদের (তালাক দিয়ে) পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয়, যদিও অন্যদের সৌন্দর্য তোমাকে বিমোহিত করে। এর পরেও তিনি ৪টি বিয়ে করেন। এবং দুইজনকে তালাক দেন। মোট ১১জন।

Post a Comment

Previous Post Next Post